
বোরখা পরা মেয়েটা আমার পাশেই বসল-একটু যেন চেপেই। আমরা এখন যে ম্যাজিক গাড়িটিতে বসে আছি সেটিতে একটু চাপচাপি করেই বসে আছি। তবে আমি মেয়েটির দিকে বেশি চেপে যাইনি এক তো লজ্জায় আরেক তাকে এক প্রকার সম্মান ও সম্ভ্রম দেখানোর তাগিদে। এটা আমি প্রায় করে থাকি। যারা ইসলামী অনুশাসন মনে চলে তাদেরকে আমি সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে নিজেই গর্ব বোধ করি-এটা আমার ভালো লাগে। কেননা আমি এও বিশ্বাস করি যে, তারা সত্যি সম্মানীয়।
যাই হোক যে ম্যাজিক গাড়িটিতে বসে আছি সে গাড়িটিতে আরো দুটি লোকের বসার জায়গা আছে বলে গাড়িটি এখনও ছাড়ছে না। মানে গাড়ি ফুল ভর্তি করে তবেই এরা ছাড়বে। আমি একটু বিরক্তই হলাম। মিনিট দশেক হবে এভাবেই বসে আছি। ঠিক সময়ে বাড়ি পৌঁছাতে না পারলে হয়ত পথেই মাগরিবের সময় হয়ে যাবে। তাই আমি শেষ মেষ ঐ গাড়ি থেকে নেমে গেলাম। ইতিমধ্যেই দেখলাম একটি বাস আমাদের লাইনের দিকে যাচ্ছে। আমি জানি যে, এই বাসটি এক-দু মিনিটের মধ্যে এখান থেকে ছেড়ে দিবে।আমি বাসটিতে বেশ কষ্ট করেই উঠে গেলাম-কেননা এই বাসটিতে যথেষ্ট ভিড় । আসলে এই শেষ বিকালে সমস্ত কর্ম-চঞ্চল মানুষের ঘরে ফেরার সময়।
কি ভাগ্য সেই বোরখা পরা মেয়েটাকে আবার দেখলাম বাসের মধ্যে। এত ভীড়ের মধ্যে আবারও মেয়েটিকে আমি বলা যায় একটু আগ বাড়িয়ে আগলে রাখার চেষ্টা করলাম। এতে করে আমাকে একটু নিজেই নিজেই লজ্জা হয়ত লাগল তবুও এটা আমি করলাম।হতে পারে এটা দ্বীনী সম্পর্কের এক অকৃত্তিম টান। আসলে কোনো এক সম্ভ্রান্ত বাড়ির ভদ্র মহিলার এভাবে ভিড়ের মধ্যে পড়ে যাতে তার সম্ভ্রম কোনো ভাবেই নষ্ট না হয় সেটাই আমি মন থেকে চাইছি। এতে আমার তেমন সমস্যা অবশ্য হল না। কেননা বাসের অন্য লোকেরা আমাকে হয়ত ভেবে থাকবে যে আমি ঐ বোরখা পরা মেয়েটির স্বামী। দাঁড়িয়ে আছি দু’জনেই। কিন্তু এ কি সর্বনাশ ! সে কেমন যেন ধীরে ধীরে আমার সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ট হয়ে দাঁড়াবা্র চেষ্টা করছে।আমার দিকে এত চেপে আসার তো কোনো নায্য কারণ দেখছিনা। আমি লজ্জার চোটে ঐ জায়গা থেকেই বাসের একেবারে পেছনের দিকে চলে এলাম। দরকার নেই গায়ে পড়ে ঝামেলা বাড়াবার।বুঝতে পারলাম বোরখায় সব কথা বলে না। মনে মনে যবর দুঃখ পেলাম। এ কেমন মেয়ে! সুন্দর শালীন পোষাক পরে পথে-ঘাটে এ কেমন তার চাল-চলন? যারা পেট-পিঠ বের করে বে-পর্দা হয়ে চলে বেড়াচ্ছে তারাও তো এমন অশ্লীলতা করে না। -চলবে…
মুহাঃ মইদুল ইসলাম