Backlink hizmetleri hakkında bilgi al
Hacklink satın almak için buraya tıklayın
Hacklink satışı için buraya göz atın
Hacklink paneline erişim sağla
Edu-Gov Hacklink ile SEO'nuzu geliştirin

Backlink
Backlink hizmeti al

Hacklink
Hacklink hizmetleri hakkında bilgi al

Hacklink Al
SEO dostu hacklink satın al

Hacklink Satışı
Hacklink satışı ve hizmetleri

Hacklink Satın Al
SEO için hacklink satın al

Hacklink Panel
SEO hacklink paneli

Edu-Gov Hacklink
Etkili EDU-GOV hacklink satın al

For more information and tools on web security, visit DeepShells.com.tr.

To get detailed information about shell tools, visit DeepShells.com.tr.

To learn more about Php Shell security measures, check out this article.

For the best Php Shell usage guide, click on our guide.

If you want to learn about Aspx Shell usage to secure web applications, click here.

What is Aspx Shell and how to use it? Check out our Aspx Shell guide: Detailed information about Aspx Shell.

For detailed information about Asp Shell security tools in web applications, you can check out this article.

Discover the best Asp Shell usage guide for developers: Asp Shell usage.

ইসলামমতামত

পথ চেনার পথ

606views

অরিজিৎ রায়


সংগঠন থেকে এই প্রথম আমাকে কোনও মিশনে পাঠিয়েছে। স্বভাবতই খুব এক্সাইটেড আমি। যে গ্রামে এসেছি তার নাম করীমগঞ্জ। মেইন রোড থেকে ঢালু রাস্তা নেমে দু’পাশে খানিক খালি জমি। এলাকার ক্লাবের জমি এসব। এরপর রশীদ মিঞার বাড়ি। ওখান থেকেই গ্রামটা শুরু হয়েছে। কমবেশি দুশো ঘরের মুসলিম প্রধান গ্রাম। এটাই আমার টার্গেট। আশেপাশের সমস্ত গ্রামে প্রভাব থাকলেও করীমগঞ্জে আমাদের কোনও প্রভাব নেই। অনেক চেষ্টা করেও এখানকার হিন্দু পাড়ায় আমরা কোনও ইউনিট খুলতে পারিনি। ওদের মনে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ঢুকিয়ে দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কেন এই ব্যর্থতা, তার কারণ অনুসন্ধানের জন্যই আমার এখানে আসা। সমস্ত এলাকার মুসলমানদের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য আমাকে জোগাড় করে ফিরে যেতে হবে।

একসপ্তাহ হচ্ছে এসেছি। আমাকে এখানে ফটোগ্রাফার হিসেবে সবাই চেনে। সারাদিন ক্যামেরা গলায ঝুলিয়ে সমস্ত গ্রাম ঘুরে বেড়াই। মুসলমানদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করি। বেশ কযেজনের সাথে ভালোই ঘনিষ্ঠ হযে উঠেছি। বিশেষ করে আবদুল্লাহর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে আমার কাজ অনেক এগিয়ে গেছে। ইমাম সাহেবের মেজো ছেলে সে। গ্রামে ভালো প্রভাব আছে। ফটোগ্রাফির সখ ছিল তার এককালে। সেই সখই ওকে আমার কাছে এনে দিয়েছে। প্রয়োজনীয় নানান তথ্য জোগাড় হচ্ছে নিযমিত। গ্রামের মানুষ আমাকে খুব সম্মান করে। বিভিন্ন বিষয়ে এসে আলাপ করে। তারমধ্যে বেশিরভাগই দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু থাকে ধর্ম নিযে তারা কীভাবে গ্রামে সম্প্রীতি ধরে রেখেছে সেসব গল্পও হয়। আমার খুব বিরক্ত লাগে ওদের এই ভালোমানুষি দেখে। ওদের খুব ভালো করেই আমি চিনি। এসব ওদের নাটক। আস্ত শয়তান ওরা। কিন্তু অস্বস্তি একটা থেকেই যাচ্ছে। ওদের এত কাছ থেকে দেখার পর আমার এতদিনের জানার মধ্যে কোথাও একটা সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

্প্রতিদিনের মতো আজও বেরিয়েছি। খুব ভোরেই আমি বের হই। একেকদিন গ্রামের একেকটা দিকে আসি। তারপর ছবি তোলার ভান করে ঘোরা শুরু করি। আজ ক্লাবের মাঠের দিকে এসেছি। অনেকগুলো অহেতুক ছবি তুলতে তুলতে মেইন রোডের আশপাশটা ঘুরছি। আজ রোজার ঈদ। একটু পরেই সেজেগুজে ঘুরতে বেরোবে সব। আমাদের অনুষ্ঠানের সাথে মুসলমানদের অনুষ্ঠানের কোˆনও তুলনাই হয় না। ঈদে তো ওদের নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্যই নেই। সেজন্য সারাদিন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। ফালতু একটা অনুষ্ঠান। ঠোঁটের কোণায় তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠল আমার।

সামনেই রশীদ মিঞার বাড়ি। খুব গরিব। ভ্যান চালিযে খায়। ব্যাটা আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও পড়ে। বোমটোম রাখে নিশ্চয। বাড়ির কাছে যেতে সেমাইয়ে গন্ধে নাক ভরে গেল। ভাঙা ঘর থেকে চাচা বেরিযে এসে আমায খুব খাতির করে বাড়ির ভেতর ডাকল। আমি পা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম হঠাত্ মনে পড়ল মুসলমান বাড়িতে না খাওযার শপথের কথা।বললাম সময় নেই চাচা, ফিরতে হবে। বলেই হনহন করে হাঁটা দিলাম।

গ্রামের মাঝামাঝি একটা বড়ো পুকুর আছে। আজ দেখলাম কচিকাঁচা আর যুবক ছেলেরা ভিড় জমিয়েছে পুকুরে। শানের উপর লাইন দিযে সাবান রাখা। সবই সুগন্ধি সাবান মনে হচ্ছে। মনে মনে বললাম ব্যাটারা নোংরার জাত। সারা বছরের মযলা আজ তুলবে। হঠাত্ মনে পড়ল গত একসপ্তাহ ধরে দেখছি মুসলমানরা দিনে পাঁচবার হাত-পা-মাথা ধোয। তাহলে ওরা নোংরা হল কীভাবে? মনে এ ভাবনা বসতে না দিযে এক“পুকুর মানুষের স্নান করা দেখতে থাকলাম। স্বচ্ছ জলের ভেতর হুল্লোড় আর হাসির সে অপূর্ব খেলা একরাশ মুগ্ধতা তৈরি করল। সেই জলে আমার মনের ময়লা ধুয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ মনে হল ব্যাটারা নিশ্চয় যাদু জানে। শিগগির এখান থেকে চলে যেতে হবে। না হলে এরা আমায় জাদু করে ফেলবে।

রতন কাকুর চায়ের দোকানে এসে বসলাম। প্রতিদিনই বসি। চা-পাউরুটি আর খোশগল্পে খানিক সময় কাটে। খোশগল্পের মাধ্যমে প্রয়োজনীয তথ্য আদায় করে নেই। আজও সেটাই করছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখলাম সুন্দর সুন্দর পাঞ্জাবি পরে ছেলে-ছোকরারা এদিকেই আসছে। বুঝলাম ওরা ঈদের নামাজ পড়তে যাচ্ছে। রতন কাকুর দোকানের পাশের বাড়ি থেকে হারু মিঞার ছেলেটাও দেখলাম বেরোচ্ছে। মিঞার বউ ছেলের হাতে একবাটি সেমাই দিল।

জিজ্ঞেস করলাম, সেমাই কেন?

বলল, ঈদের নামাজের আগে মিষ্টি খেতে হয়।

এটা আমাদের রীতি।

মিষ্টি মুখে বের হতে হয ঈদের নামাজের জন্য।

আমার তখন মাযে কথা মনে পড়ল। শুভ কাজে যাওয়ার সময সবসময় মা মুখে মিষ্টি কিছু দিয়ে দেয়। হারু মিঞার বউয়ের মধ্যে আমার মাকেই কি দেখলাম? চমকে উঠে নিজেকে সামলে নিলাম। মনকে বোঝালাম, এরা আসলে শয়তানের জাত। সুযোগ পেলেই এরা আমাদের দেশটাকে আবার ভাগ করবে। এদের উপর তাই কোনও দয়ামায়া দেখানো যাবে না। কিন্তু বুঝতে পারলাম, ওদের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছি। সেই তীব্র ঘৃণা আর নেই। তৱুও মনকে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকলাম।

নামাজের নাম শুনলেই আমার গা জ্বলে ওঠে। ভারতমাতা বাদ দিয়ে কোথাকার কোন আল্লাহর প্রতি ওদের এই নামাজ সহ্য হয না। তৱু কেন জানি আজ খুব ইচ্ছে করছিল ওদের নামাজ দেখার জন্য। তাছাড়া তথ্য সংগ্রহের জন্যও আমাকে যেতে হবে। কেননা, এই ক’দিনে এটুকু ৱুঝেছি যে, এলাকা শান্ত থাকার জন্য গ্রামের ইমামের বড়ো অবদান রযেে। অথচ তার সাথেই তেমন আলাপ করা হযে ওঠেনি এখনো। পাযে পাযে তাই পেঁছে গেলাম ঈদগাহে। গিযে দেখলাম ইমাম সাহেব বক্তব্য দিচ্ছেন। আমার কান খাড়া হযে উঠল। ভাবলাম আমাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয কিছু বলবেন। ভারতমাতার বিরুদ্ধে জেহাদের জন্য মুসলমানদের তৈরি হতে বলবেন। হিন্দুদের কচুকাটা করার কথা বলবেন। কিন্তু অবাক হযে শুনলাম ইমাম সাহেব সম্প্রীতির কথা বলছেন। ভারতবর্ষের মাটি যাতে দাঙ্গার রক্তে লাল না হযে তার জন্য আল্লার কাছে দোওযা করছেন। প্রতিবেশী হিন্দুদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরির কথা বলছেন। প্রতিবেশীদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করার আদেশ নাকি তাদের নবি দিযেেন। যারা প্রতিবেশীদের কষ্ট দেয, তারা নাকি কঠিন শাস্তি পাবে কেযামতের দিন।

ইমামের বক্তব্য খুব মন দিযে শুনছিলাম। আমার জানা মুসলমানদের সাথে বাস্তবের মুসলমানদের এত অমিল দেখে আশ্চর‌্য হযে গেলাম। গত একসপ্তাহ ধরে আমি বারবার এসব অনুভব করেছি। কিন্তু ঘৃণা দিযে সে অনুভব চাপা দিযেি। কিন্তু এবার আর পারলাম না। তবে কি আমি এতদিন ভুল জেনে এসেছি ওদের? আমার এলাকায কোˆনও মুসলিম পাড়া নেই। একচেটিযা হিন্দু প্রধান এলাকা। আমাদের সংগঠনের বড়ো ঘাঁটি রযেে ওখানে। আমার বাবাও সংগঠনের সদস্য। সে সূত্রে আমিও ছোটবেলা থেকেই সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছি। মুসলমানদের প্রতি ঘৃণার কারণে যা এক দু’জন মুসলমান পড়ত আমার সাথে, তাদের সাথে আমি কথাও বলতাম না। ফলে ওরা আমার সম্পূর্ণ অচেনাই রযে গেছে। ওদের শুধু সংগঠনের চশমাতেই দেখে এসেছি। কিন্তু কযেদিন ওদের কাছ থেকে দেখে আমার অনেক ধারণাই পাল্টে গেছে। আমি ভীষণ দ্বিধায পড়ে গেছি। সত্য আর মিথ্যার এই দ্বন্দ্বে মানুষের মনে সবসময চলতে থাকে। মানুষ সত্য ভালোবাসে। সত্য মানুষের মনকে অনাবিল শান্তিতে ভরিযে দেয। এতদিন আমি মুসলমানদের শত্রু ভাবতাম। আর এটাকেই সত্য ভাবতাম। কিন্তু কই, শান্তি তো পাইনি। উল্টে হিংসায আগুনে নিজেই জ্বলেছি। অথচ গত কযেদিনে ওদের প্রতি হিংসা যত আমার মন থেকে সরেছে, ততই এক স্নিগ্ধ শান্তিতে ভরে উঠেছে আমার মন। তবে কি আমি এতদিন ভুল জানতাম? চোখের সামনে সব ঝাঁপসা হযে আসছে। কিছুই ভাবতে পারছি না আর।

বক্তব্য শেষ হল। বক্তব্যের পর নামাজে দাঁড়াল সবাই। যেভাবে মহান সম্রাটের সামনে অনুগত প্রজারা দাঁড়ায, সেভাবেই ওরা দাঁড়িযেে। ৱুকের নীচে হাত বাঁধা, মাথা ও চোখ মাটির দিকে। সমস্ত শরীর থেকে আনুগত্য ও শান্তির আলো যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে। আমি মুগ্ধ হযে শুধু দেখছি কোˆনও এক অদৃশ্য শক্তির সামনে এক অকৃত্রিম আনুগত্যের এই সারিবদ্ধ মানুষদের। এ দৃশ্য যেন অপার্থিব। আমি মুগ্ধ হযে দেখতে থাকলাম।

একসময নামাজ শেষ হল। আমার ঘোর তখনও কাটেনি। দেখলাম ইমাম সাহেব আবার বক্তব্য শুরু করেছেন। এবার আরবিতে।কিছুই ৱুঝতে পারছিলাম না। তবে ভালো লাগছিল। বক্তব্য শেষে সবাই হাত তুলে ত ওদের আল্লাহর কাছে কিছু চাইল। এরপর সবাই হাসিমুখে উঠে একে ওপরে জড়িযে ধরে ‘ঈদ মুবারক’ বলতে লাগল। দেখলাম আজন্ম শত্রু হারুন এবং রহিম মিঞাও হাসিমুখে একে অপরকে জড়িযে ধরল। যেন কত অন্তরঙ্গ তাদের সম্পর্ক! প্রত্যেকের মুখেই আজ হাসি। অকৃত্রিম হাসি। সবাই হাসছে, জড়িযে ধরছে একে অপরকে। পরিচিত কযেজন এসে আমাকেও জড়িযে ধরল। আমি তখন প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় চলে গেছি। চারপাশটা হঠাত্ যেন খুব অচেনা হযে উঠেছে। আবদুুল্লাহ এসে বলল চলুন আমাদের বাড়ি। আজ আপনাকে ছাড়ছি না। আমার যে কী হল, কোনও কথা না বলে হাঁটতে লাগলাম ওর সাথে। দেখলাম পথঘাট সব যেন রঙিন হযে গেছে। সোনার কুচি মেশানো হাওয়া বইছে যেন চারপাশ জুড়ে। হঠাত্ই ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম আবদুুল্লাহ, তোমাদের চিনতে চাই। চেনাবে? আবদুুল্লাহ অবাক হয়ে কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে চেয়ে রইল। তারপর একটা নির্মল হাসি দিয়ে বলল, অবশ্যই চেনাব। আগে তো বাড়ি চলুন।

ওরা দু’জন এখন গাঁযে সরু রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে। চারিদিকে সবুজ ক্ষেত। দূরে সূর্যের আলো পড়ে পুকুরের জলে গাছেদের ছাযারা দুলছে। মাঝেমাঝে ছাযারা একে অপরকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। আজন্ম একাকী গাছেদের এই ক্ষণিকের ছোঁয়াছুঁয়ি দেখে চোখের কোণায় একটু জল এল পথিকের। পথিক আর আবদুুল্লার ছায়াও তখন সবুজ ক্ষেতের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। ওরা কি মিশবে ?


লেখক – কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক

Leave a Response