
গোলাম কিবরিয়া
কলা বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা অথবা বিজ্ঞান- সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ খ্যাতি ধরে রেখেছে। সঠিক পরিকল্পনাই পারে একজন শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করতে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম উভয় শিক্ষার্থীরা ব্যাচেলরস ও মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করতে পারে এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রিসার্চে অংশগ্রহণ করতে পারে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যও সুযোগ-সুবিধা, যেমন- আলাদা বাসস্থান, আলাদাভাবে পড়াশোনার সুযোগ আছে।
তবে তার আগে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পুরো বৃত্তান্ত বৃত্তির জন্য দেখে থাকে। পুরো বৃত্তান্ত বলতে পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ, জিপিএ, প্রশংসাপত্র, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, এজ, মাস্টার্স, পিএইচডি ডিগ্রি প্রার্থী অথবা স্নাতকোত্তরের স্কোর এসব দেখেই বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করে সে কী পরিমাণ বৃত্তি পাবে।
- আবেদন প্রক্রিয়া
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য নিম্নলিখিত আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে :
– আপনার কাঙ্ক্ষিত বিভাগে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়সীমা প্রথমে যাচাই করুন।
– আবেদন ফরম ও অন্যান্য তথ্যের জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফিস বরাবর লিখুন।
– বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও আপনি আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারেন।
– অ্যাডমিশন অফিস আপনাকে ভর্তি-সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য জানাবে।
– কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি চালু আছে।
– আপনি অন্তত এক বছর সময় হাতে রেখে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু করুন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
– রিকমেন্ডেশন লেটার, নিজ সম্পর্কে প্রবন্ধ।
– সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকলে তার বিবরণ। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
– পূরণকৃত আবেদনপত্র।
– আবেদন ফি পরিশোধের প্রমাণপত্র।
– পূর্বতন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ইংরেজি সংস্করণ। শুধু অনুমোদিত যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিলিখন সম্পন্ন হতে হবে।
– স্কুল-কলেজের ছাড়পত্র।
– টোফেল পরীক্ষার ফলাফলের সনদ।
– প্রয়োজন সাপেক্ষে জিআরই, স্যাট বা ডিম্যাটের ফলাফলের সনদ।
– পাসপোর্টের ফটোকপি।
-ভালো করে Statement of purpose অনেক শিক্ষার্থীই লেখে না। খুব সাধারণভাবে লেখে। প্রার্থীর ব্যাপারে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকে না। দ্রুত শেষ করতে চায়।
অন্যজনেরটা নকল করে। তাই Statement of purpose ভালো করে লিখতে হবে
ইংরেজিটাও ভালো শেখা চাই :এই জন্য সবসময় ইংরেজি বলা এবং লেখার অনুশীলন করতে হবে, বন্ধুদের অথবা বাবা-মা-ভাইবোনের সঙ্গেও ইংরেজিতে কথা বলে নিজের ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব।
অনেকেরই হয়তো জানা নেই, যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনাবিষয়ক সব ধরনের তথ্য দিয়ে এবং ভর্তি-সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ের পরামর্শের জন্য ঢাকার ধানমণ্ডির ১৬ নম্বর সড়কে অবস্থিত এডওয়ার্ড এম কেনেডি (ইএমকে) সেন্টার কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে আনছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যার সমাধান করতে অথবা তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে তারা শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং সেশনেরও ব্যবস্থাও করছে। যে কোনো শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অত্যাধুনিক গ্রন্থাগার ব্যবহার করে সহজেই স্ট্যান্ডারাইজড টেস্ট (জিআরই, জিম্যাট, স্যাট) এবং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি টেস্টের (আইইএলটিএস, টোফেল) প্রস্তুতি নিতে পারে। একজন শিক্ষার্থী কীভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবে, সে বিষয়ে গাইডলাইন দেওয়া হয় ইএমকে সেন্টারের পক্ষ থেকে।
- টোফেল
যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে পড়তে গেলে ইংরেজিতে দখলের একটি পরীক্ষা দিতেই হয়। TOEFL এর পুরো মানে- টেস্ট অব ইংলিশ অ্যাজ আ ফরেন ল্যাংগুয়েজ। এখন টোফেল পরীক্ষা দিতে হয় অনলাইনে। পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। খরচ ১৬০ ডলার। চারটি বিভাগে পরীক্ষা হয় রিডিং, লিসেনিং, স্পিকিং ও রাইটিং। ওয়েবসাইট- https://www.ets.org/toefl/ibt/register/
মোট নম্বর ১২০। হার্ভার্ডে পড়তে কমপক্ষে ১০০ ও অক্সফোর্ডের জন্য কমপক্ষে ১০৯ স্কোর পেতে হবে।
এ ছাড়া ৮০ থেকে ১০০-এর মধ্যে স্কোর থাকলেও বাইরের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া যায়।