রফিকুল হাসান
স্নেহের খোকা ভালো আছিস ?
ভীষণ ভালো থাকিস !
ভালো আছে শানবাঁধানো পুকুর,
যেটায় আমি নিজে হাত লাগিয়ে ছিলাম !
শান্ত দুপুরে কলমিলতার জঙ্গলটা
যেটা আমি নিজে হাতে লাগিয়ে ছিলাম,
ওটা একটু পরিস্কার রাখিস,
যেন কোন বিষধারী বাসা না বাঁধে !
সাজানো বাগান সাজানো দালান
পুরানো পল্লীগীতি গেঁয়ো গান
সোঁদা মা’টির মায়াভরা ঘ্রাণ
সব তেমনিই আছেত আমাদের মফস্বলে ?
নাকি অকালে হারিয়ে গেছে সব শহুরে স্রোতে ?
খোকা মনে পড়েরে তোর !
তোর জন্যে হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরে
বেড়ার বাগানে বটতলায় দোলনা টাঙ্গিয়ে
তোকে সেদিন কত দুলিয়েছিলাম !
সেদিন তোকে সাধ্যমতো রাঙ্গিয়েছিলাম !
আজও বটবৃক্ষের ছায়ার মত
মায়াভরা বিদীর্ণ বুকে বটের ঝুরির মত
স্মৃতিরা দোলেরে………..!
তুই সোনাঝুরি,দেবদারু,
মহিরুহ হবি বলে কত শখ আহ্লাদ
বন্ধক দিয়ে আজ নিজেই বাঁধা পড়েছি
শত যোজন দূরে….অচল আধুলি !
খোকা ভালো থাকিস!
দাদু ভাইকে বলিস সে যেন
বড় হয় খুব,তোর চেয়ে শত গুণ
গুনধারী হয় যেন……!
তোকে যেন আমার চেয়েও ভালো,
আরও ভালো আশ্রম দিতে পারে,
যেখানে বর্ষায় জল পড়বেনা,
গ্রীষ্মকালে পিচগলা তাপ ঢালবে না,
শৈত্যপ্রবাহে জানালায় থাকবে পুরুপর্দা !
তখন পুরানো মনস্তাপে
মন খারাপ করিসনা খোকা…!
আজ আমি অচল, চলৎশক্তিহীন
ক্ষীণ দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে থাকি
সবই অদৃষ্ট, ললাটলিখন !
দেখিস একদিন আমার দাদু ভাই
তোর চাইতেও সচল হবে, হবেই হবে,
আমার বৌমা যতই আধুনিক হোক
তোর বৌমা হবে অত্যাধুনিক!
তুই তখন আপেক্ষিক অচল,
সবই সাপেক্ষে…!
তখন যেন পাল্লা দিয়ে তোর জন্য
আরোও সাজানো গোছানো হয় বৃদ্ধাশ্রম,
তোর যেন কোন কষ্ট হয়না’রে খোকা !