featured

গাছ লাগাও পৃথিবী বাঁচাও

1.4Kviews

সাদ্দাম হোসেন

“তিনি(আল্লাহ) আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর এর দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেন”-সূরা আনআম ৯৯

আরবি নাবাত শব্দের সাধারণ অর্থ গাছপালা, আর গাছপালা মানুষের পরম বন্ধু। গাছপালা থেকে পৃথিবীর বিস্ত্রীন প্রান্তর জুড়ে উৎপন্ন হয় নানাবিধ ফসল। বৃক্ষ সৃষ্টি জগতের এক অনুপম সৌন্দজ্য আল্লাহতায়লার নিয়ামত। তিনি যেমন সুন্দর তেমনি তিনি সুন্দরকে ভালোবাসেন। বনের গাছপালা কার্বন ডাই আক্রাইড, ধুলোবালি, ধূপকণা, ইত্যাদি স্পঞ্জের মতো শোষন করে বলে অরণ্যকে প্রকৃতির স্পঞ্জ বলা হয়। পরিবেশের বিস্তার স্থায়িত্ব নির্ভর করে অরণ্যের বিস্তার ও প্রকৃতির উপর।

গাছের গুরুত্ব, – সবুজ গাছপালা আমাদের জীবন ও জীবিকা। “তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্টি জগতের জন্য। এতে আছে ফলমূল এবং বাহিরাবন বিশিষ্ট খেঁজুর বৃক্ষ। আর আছে খোসা বিশিষ্ট শস্য ও সুগন্ধি ফুল”-আর রহমান

প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতিটি বৃক্ষ, লতাপাতা, ফুল ও ফল আল্লাহতায়ালা মানুষকে উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। গাছপালা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে অনবরত মানুষের উপকার করে যাচ্ছে। গাছ আমাদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে এবং কার্বন ডাই আক্সইড গ্রহণ করে পরিবেশ বিশুদ্ধি রাখে। গাছপালা ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকার উপায় নেই। গাছ থেকে পাওয়া অক্সিজেন মানুষের জীবন ধারনের জন্য অপরিহায উপাদান। গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গাছ লাগানো ও পরিচার্য করা সয়াবের কাজ। তাই গাছ লাগানো প্রতি গুরুত্বরোপ করে মহানবী হজরত মহম্মদ সাঃ বলেছেন, যদি কিয়ামত সংগঠিত হওয়ার মুহূত্বেও তোমাদের কারও হাতে একটি চারা গাছ থাকে, তাহলে সে যেন সেই বিপদ সংকুল মুহূত্বেও যেন তা রোপন করে দেয়।

গাছের প্রয়োজনীয়তা,-  গাছপালা আমাদের প্রতিদিন জীবন ধারণ, শিল্প কারখানা, আসবাব পত্র, ওষুধ, জ্বালানী প্রভিতি কাজে উপকার সাধন করে জৈববৈচিত্র বজায় রাখে। এছাড়া গাছপালা পরিবেশ সংরক্ষণ, ভূমির উর্বরতা , ভূমি ক্ষয়রোধ, ক্ষরা, বন্যা, ভূমিকম্প, জলোচ্ছাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করে। বায়ুদূষণের ফলে দূষিত পদার্থকে শোষণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। আপনার গাছের ফল  কোন পশুপাখি ভক্ষণ করলে তা দান ও সদকা রূপে গণ্য হবে।

হজরত মোহাম্মদ সাঃ বলেছেন মৃত্যুর পর মানুষের  তিন প্রকার আমল ব্যাতিত সকল আমল বন্দ হয়ে যায়। তার মধ্যে একটি আমল সদকারে জারিয়া অথাৎ গাছ লাগানো। কোন ব্যক্তি  গাছ লাগানোর পর যতদিন গাছটি মানুষের উপকার করিবে  যেমন ছায়া, ফল মূল, অক্সিজেন দিয়ে, ততদিন মৃত্যু ব্যাক্তি সওয়াব পেতেই থাকবে।

গাছের উৎপত্তি,- আপনারা কি একবারও চিন্তাভাবনা করে দেখেছেন গাছ কিভাবে উৎপন্ন হয় ?  উদ্ভিদ ও ফসলের বীজ বপন করে কিভাবে অংকুরোধগম ঘটে ?

এর কারনগুলি হল মাটিকে আল্লাহতায়ালা উর্বর শক্তি  দিয়ে দিয়েছেন এবং আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেন। ফলে পানি ও উর্বর শক্তির প্রভাবে বীজ অংকুরোধগম হয়। এবং মাটি ভেদ করে জেগে উঠে। তাছাড়া উদ্ভিদ ও ফসলের পুষ্টি সাধনের জন্য মাটির মধ্যে ১০টি রাসায়নিক পদার্থ ও ৪টি গ্যাসীয় পদার্থ আল্লাহতায়ালা দিয়ে দিয়েছেন।

বৃক্ষ সংরক্ষণ,- পৃথিবী জুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে একে রোধ করার জন্য  ২০১৭ সালে  ২২শে এপ্রিল নিউয়ার্ককে  ১৭৪ টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে  জলবায়ু সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর করেন। পৃথিবী জুড়ে ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করা মূলত এই চুক্তির শর্ত। অসময়ে বন্যা, ক্ষরা দেখা যাচ্ছে, হিমবাহ গেলে যাচ্ছে, ভূমিকম্প হচ্ছে এর কারণ হিসেবে দেখা যায় অপরিণত অবস্থায় গাছ কাটা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ গাছ না লাগানো। তাছাড়া দাবানলের প্রভাবে বিস্তীন এরিয়া পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদেরকে বৃক্ষ সংরক্ষণে গুরুত্ব পুন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

গাছ লাগাও পৃথিবী বাঁচাও,-  ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস কেন্দ্র করে জনসচেতনা বৃদ্ধি করা। বনভুমি ধংস প্রাপ্ত অংশে বৃক্ষ রোপন করা। পরিনত বৃক্ষ ছেদন স্থানে নতুন চারা গাছ রোপন করা। এর ফলে গাছ বাঁচলে পৃথিবীও বাঁচবে। আমার একে অপরের হাতে হাত দিয়ে গড়ে তুলি দূষণমুক্ত সুন্দর পৃথিবী।

 

Leave a Response