
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]
ভোর,
চারিদিকে খোলাফায়ে রাশেদার
সভ্যতার আলোকের মতো,
উজ্জ্বল সফেদ স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে পড়েছে।
ফজরের পবিত্র আবেগে উদ্ভাসিত মন।
প্রশান্ত আত্মার অনাবিল প্রশান্তি,
শিহরণ জাগায় হৃদয়ে
ফোনের রিং শুনে চমকে উঠে দেখি,
মায়ের ফোন।
মা আমাকে ডাকছে,
যেতে হবে বাড়িতে।
শুনলাম এবার নাকি আপেলের বাগানে,
খুব ভালো ফল হয়েছে।
বাবা মারা যাওয়ার পর,
মা ও বোনকে ঘিরে যত স্বপ্ন।
ভার্সিটির মসজিদ থেকে বেরিয়ে,
তাই রওনা দিলাম বাড়ির পথে।
দ্বিপ্রহর,
রবি মামা মাথার উপর কড়া প্রহরা দিচ্ছে।
চারিদিকে যেন জ্বালাময়ী শূন্যতা।
ধূ ধূ করছে চারপাশ।
সবুজ নেই,
আছে নাগরিক জীবনের স্তব্ধতা।
সেই স্তব্ধতা ভেঙে চলছে আমাদের গাড়ি।
গোধূলি বেলা,
সূর্যটা সুন্দরী মেয়ের মতো
লজ্জায় লাল হয়ে,
ডুবে যাচ্ছে অস্তাচলে।
চারিদিকের লালচে আভা মনটাকে
কেমন প্রেমিক করে তোলে।
গ্রামে পথের দুই ধারে ক্ষেতের জলপাই
গাছ গুলো আমাকে দেখে যেন,
নেচে উঠলো।
সবুজ পাতার স্পর্শে
আমাকে অভিনন্দন জানালো।
কিন্তু তাতে যেন রয়েছে বিষন্নতার ছোঁয়া।
মনে হচ্ছে তারা দুঃখের বিউগল বাজিয়ে,
কিছু বলতে চাচ্ছে।
চারিদিকে যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা।
থমথমে হয়ে আছে সবকিছু।
বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি,
একটা বিরাট গর্ত!
নেই দুতলার চিলেকোঠার ছাদ!
ছিন্নভিন্ন কয়েকটা দেহ
পড়ে আছে নিথর হয়ে,
মায়ের মুখটা রক্তমাখা
বোমার আঘাতে শেষ হয়ে গেছে,
বোনের সোনারবরণ দেহ!
জীবন বাঁচাতে ছুটে চলছি তাই,
নতুনের সন্ধানে।
অন্ধকার,
চারিদিক শুনশান, প্যাঁচার ডাক যেন,
মৃত্যুর ভয় ডেকে আনছে।
ঝিঝি পোকার ডাক গুলোকেও যেন মনে হচ্ছে মৃত্যুর সংগীত বাজাচ্ছে।
আমি ছুটে চলি ঠিকানাহীন এক পথে
জানিনা এর শেষ কোথায়!
কখনো পাড়ি দিই মরুভূমির নির্মম যন্ত্রণাকে!
ব্ল্যাক মাম্বার বিষাক্ত ছোবল
তুলে ধরেছে তার দেড় ফিট ফণা।
যার একছবলে,
শরীর মৃত্যুর চাদরে মুড়ে যাবে!
মৃত্যুকে উপেক্ষা করে ছুটে চলছি,
ভালোবাসার সন্ধানে।
একটা ছোট্ট স্টিমার,
ছুটে চলছে সাগরের নীল জলের বুক চিরে,
সাথে তার ঝিমঝিম শব্দ।
স্টিমারের শব্দ টা যেন,
বেঁচে থাকার তাগিদ দিচ্ছে।
উত্তাল ঢেউয়ের আছড়ে পড়ছে সূর্যের রশ্মি। প্রিজমের মত বিচ্ছুরিত হচ্ছে,
সূর্যের বর্ণালীর রং
সূর্যের রং টা টা বেশ চমকপ্রদ।
যুদ্ধাহত জীবনের মত বীভৎস ধূসর নয়।
আমরা এসে পৌঁছেছি একটি নতুন দেশে,
এখানে আছে শিশুর কোলাহল,
আছে কর্মব্যস্ততা!
আছে স্বপ্নের হাতছানি।
রাস্তার দুই ধারে বড় বড় বিল্ডিং গুলো,
মাথা উঁচু করে করে বেঁচে থাকার কথা বলে।
ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছের মতো হতে নিষেধ করে। তাই মাথা তুলে বাঁচতে শিখেছি।
একটা ছোট্ট শিশু,
থাকে আমার তাঁবুর পাশের তাঁবুতে।
তার গোটা গা খালি।
শরীরের রয়েছে জীর্নতা!
সে তার মায়ের চোখের জল মুছে দিচ্ছে
তার দেহের লজ্জা না থাকলেও,
মানবিক লজ্জাটা তার প্রচন্ড।
তাই হয়তো সে,
তার মায়ের চোখের জল,
মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এই লজ্জাটাই আমাদের মোড়লদের নেই।
ইউক্যালিপটাস গাছের নীচে
একটা মেয়ে বসে আছে।
পরোনে একটা ধবল চুরিদার,
মাথায় সাদা স্কার্ফ।
স্টিমারে আমার পাশে বসে ছিল মেয়েটি।
একদৃষ্টে তাকানোর সাহস হয় নি।
সীমা লঙ্ঘনের অজানা ভয়ে।
কয়েক পলকে দেখে মনে হয়েছে,
যেন অচিনপুরের রাজকন্যা।
তার চোখগুলো হরিণীর মত টানাটানা,
তবে তাতে স্বপ্নের চাঞ্চল্যতা নেই।
ফুটন্ত ভাতের হাঁড়িতে যেমন,
ফ্যানের আস্তরণ পড়ে।
মেয়েটার গালে তেমন,
কান্নার নোনা প্রলেপ লেগে আছে।
স্বর্ণালী চাঁদ,
তার মায়াবী জোছনা বিলাচ্ছে।
সাদা কাফনের মতো বরফে মোড়া,
আল্পস পর্বত থেকে,
শীতের ধারালো বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
সন্ধ্যের শবনমে ভিজে গেছে কচি কচি ঘাস।
আমি তাঁবুর বাইরে আগুন জ্বালিয়ে,
উষ্ণতার আবেগ নিচ্ছিলাম!
একটি তাঁবু থেকে ক্ষীন আর্তনাদ ভেসে আসছে ভিতরে গিয়ে দেখিসেই মেয়েটি,
দুই চোখ তার বন্ধ।
আমি কপালে হাত দিতেই চমকে উঠে,
চোখ মেলল।
শুকনো গোলাপের কুঁড়ির মত,
ঠোঁটটা কেঁপে ওঠে।
শরীর তার হুতামার মত গরম।
জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে।
আমি ঠান্ডা জলের জলপট্টি করে দিচ্ছি।
খুব কাছাকাছি দুজনে!
তাই তাকওয়ার চাবুক,
আঘাত করছে বিবেককে।
ফজর,
চারিদিকে প্রশান্তির আবেশ।
আকাশের চাঁদ টা ,
লাজুক চোখে,
আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
সামনের বিল্ডিং গুলোর চায়ের কাপ থেকে
সভ্যতার ধোঁয়া উঠছে।
হালকা রোদের মিষ্টি আলোয়,
ভরে উঠেছে ভোরের আকাশ।
নতুন জীবনের বার্তা নিয়ে এসেছে সে।
আমার চোখ আটকে গেছে,
সৃষ্টির দর্শনের পাতায়।
বার্কলে হিউমের তত্ত্ব আমি বুঝতে পারিনি।
তবে,
সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টার যে তত্ত্ব লুকিয়ে আছে
তা হৃদয়কে নাড়া দেয়।
দৃষ্টি আমার ছুটে যায়,
শূন্যে মহাশূন্যে
রবের প্রেমের সন্ধানে….।।