Backlink hizmetleri hakkında bilgi al
Hacklink satın almak için buraya tıklayın
Hacklink satışı için buraya göz atın
Hacklink paneline erişim sağla
Edu-Gov Hacklink ile SEO'nuzu geliştirin

Backlink
Backlink hizmeti al

Hacklink
Hacklink hizmetleri hakkında bilgi al

Hacklink Al
SEO dostu hacklink satın al

Hacklink Satışı
Hacklink satışı ve hizmetleri

Hacklink Satın Al
SEO için hacklink satın al

Hacklink Panel
SEO hacklink paneli

Edu-Gov Hacklink
Etkili EDU-GOV hacklink satın al

For more information and tools on web security, visit DeepShells.com.tr.

To get detailed information about shell tools, visit DeepShells.com.tr.

To learn more about Php Shell security measures, check out this article.

For the best Php Shell usage guide, click on our guide.

If you want to learn about Aspx Shell usage to secure web applications, click here.

What is Aspx Shell and how to use it? Check out our Aspx Shell guide: Detailed information about Aspx Shell.

For detailed information about Asp Shell security tools in web applications, you can check out this article.

Discover the best Asp Shell usage guide for developers: Asp Shell usage.

Literature

গল্পঃ পথ চেনার পথ – অরিজিত রায়

363views

সংগঠন থেকে এই প্রথম আমাকে কোনো মিশনে পাঠিয়েছে। স্বভাবতই খুব এক্সাইটেড আমি। যে গ্রামে আমি এসেছি তার নাম করীমগঞ্জ। মেইন রোড থেকে ঢালু রাস্তায় নেমে দু’পাশে খানিক খালি জমি। এলাকার ক্লাবের জমি এসব। এরপরই রশীদ চাচার বাড়ি। ওখান থেকে‌ই গ্রামটা শুরু হয়েছে। কমবেশি দুশো ঘরের মুসলিম প্রধান গ্রাম। এই গ্রাম‌ই আমার টার্গেট। এই গ্রামের আশেপাশের সমস্ত গ্রামে প্রভাব থাকলেই করীমগঞ্জে আমাদের কোনও প্রভাব নেই। অনেক চেষ্টা করেও এখানকার হিন্দু পাড়ায় আমরা কোনও ইউনিট খুলতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করেও ওদের মনে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ঢুকিয়ে দিতে পারিনি। কেন এই ব‍্যর্থতা, তার কারণ অনুসন্ধানে‌র জন্য‌ই আমার এখানে আসা। সমস্ত এলাকার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য আমাকে জোগাড় করে ফিরে যেতে হবে।

একসপ্তাহ হচ্ছে এসেছি। আমাকে এখানে ফটোগ্রাফার হিসেবে সবাই চেনে। সারাদিন ক‍্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে সমস্ত গ্রাম ঘুরে বেড়াই। প্রতিদিনের মতো আজ‌ও বেরিয়েছি। এখন সকাল। প্রাকৃতিক কাজ শেষ করে সবে আমি বাগান থেকে রাস্তায় উঠেছি, হঠাৎ শুনলাম একটা বাচ্চা ‘ঈদ মোবারক’ বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়াচ্ছে। মুখটা বিকৃত হয়ে উঠল। আজ ওদের রোজা‌র ঈদ। একটু পরেই সেজেগুজে ঘুরতে বেরোবে সব। আমাদের অনুষ্ঠানের সাথে মুসলমানদের অনুষ্ঠানে‌র কোনো তুলনাই হয় না। অনুষ্ঠানে তো ওদের নির্দিষ্ট গন্তব্য‌ই নেই। সেজন্য সারাদিন এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। ফালতু একটা অনুষ্ঠান। ঠোঁটের কোণায় তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠল আমার।

সামনেই রশীদ চাচার বাড়ি। খুব গরিব মানুষ। ভ‍্যান চালিয়ে খায়। ব‍্যাটা আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ‌ও পড়ে। বোমটোম রাখে নিশ্চয়। বাড়ির কাছে যেতে সেমাইয়ের গন্ধে নাক বুজে উঠল। ভাঙা ঘর থেকে চাচা বেরিয়ে এসে আমায় খুব খাতির করে বাড়ির ভেতর ডাকল। আমি পা বাড়িয়েই দিয়েছিলাম― হঠাৎ মনে পড়ল শপথের কথা। বললাম― সময় নেই চাচা, ফিরতে হবে। বলেই হনহন করে হাঁটা দিলাম।

রশীদ চাচার বাড়ি থেকে‌ই মুসলিম পাড়াটা শুরু হয়। প্রতিদিন আমি খুব সাবধানে এই এলাকা পার করি। এই বুঝি আমার আসল পরিচয় জেনে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে জেহাদিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে আমার উপর― এই ভয়ে তটস্থ থাকি। পাড়ার শুরুতেই একটা বড়ো পুকুর। আজ দেখলাম কচিকাঁচা আর যুবক ছেলেরা ভিড় জমিয়েছে পুকুরে। শানের উপর লাইন দিয়ে সাবান রাখা। সব‌ই সুগন্ধি সাবান মনে হচ্ছে। মনে মনে বললাম― ব‍্যাটারা নোংরা‌র জাত। সারা বছরের ময়লা আজ তুলবে। হঠাৎ মনে পড়ল গত একসপ্তাহ ধরে দেখছি মুসলমান‌রা দিনে পাঁচবার হাত-পা-মাথা ধোয়, বাথরুমে‌র পর লজ্জাস্থান ধোয়। তাহলে ওরা নোংরা হল কীভাবে? মনে এ ভাবনা বসতে না দিয়ে এক-পুকুর মানুষের হুল্লোড়-স্নান দেখতে থাকলাম। স্বচ্ছ জলের ভেতর হুল্লোড় আর হাসির সে খেলা অপূর্ব মুগ্ধতা তৈরি করছিল। সেই জলে আমাদের মনের ময়লা‌ও ধুয়ে যাচ্ছি‌ল। কিন্তু হঠাৎ মনে হল― ব‍্যাটারা নিশ্চয় যাদু জানে। শিগগির এখান থেকে চলে যেতে হবে। না হলে এরা আমায় জাদু করে ফেলবে।

সামনের একটা চায়ের দোকানে এসে বসলাম। চা-পাউরুটি আর খোশগল্পে খানিক সময় কাটল। হঠাৎ দেখি সুন্দর সুন্দর পাঞ্জাবি পরে মুসলমান পাড়ার ছেলেছোকরা‌রা এদিকে‌ই আসছে। বুঝলাম ওরা ঈদের নামাজ পড়তে যাচ্ছে। চা দোকানির ছেলেটাও দেখলাম বেরোচ্ছে। দোকানির ব‌উ ছেলের হাতে একবাটি সেমাই দিল। জিজ্ঞেস করলাম সেমাই কেন? বলল― ঈদের নামাজের আগে মিষ্টি খেতে হয়। এটা আমাদের রীতি। মিষ্টি মুখে বের হতে হয় ঈদের নামাজের জন্য। মুখ থেকে আপনা থেকে‌ই বেরিয়ে এল বাহ্! চমকে উঠে চারিদিকে দেখলাম। কেউ শোনেনি তো?

নামাজের নাম শুনলেই আমার গা জ্বলে ওঠে। ভারতমাতা বাদ দিয়ে কোথাকার কোন আল্লার প্রতি ওদের এই নামাজ সহ‍্য হয় না। তবু কেন জানি আজ খুব ইচ্ছে করছিল ওদের নামাজ দেখার জন্য। তাছাড়া তথ্য সংগ্রহের জন্য‌ও আমাকে যেতে হবে। এই ক’দিনে এটুকু বুঝেছি যে, এলাকা শান্ত থাকার জন্য গ্রামের ইমামের বড়ো অবদান রয়েছে। পায়ে পায়ে তাই পৌঁছে গেলাম ঈদগায়ে। গিয়ে দেখলাম ইমাম সাহেব বক্তব্য দিচ্ছেন। আমার কান খাড়া হয়ে উঠল। ভাবলাম আমাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয় কিছু বলবে। জেহাদে‌র জন্য মুসলমানদের তৈরি হতে বলবে। হিন্দুদের কচুকাটা করার কথা বলবে। কিন্তু অবাক হয়ে শুনলাম ইমাম সাহেব সম্প্রীতির কথা বলছেন। ভারতবর্ষে‌র মাটি যাতে দাঙ্গার রক্তে লাল না হয়ে তার জন্য আল্লার কাছে দোয়া করছেন। প্রতিবেশী হিন্দুদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি‌র কথা বলছেন। আমার মনে তখন ঝড় শুরু হয়েছে। আমার জানা মুসলমানদের সাথে বাস্তবের মুসলমানদের এত অমিল দেখে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। আমার এলাকায় কোনো মুসলিম পাড়া নেই। একচেটিয়া হিন্দু প্রধান এলাকা। আমাদের সংগঠনের বড়ো ঘাঁটি রয়েছে ওখানে। আমার বাবাও সংগঠনের সদস্য। সে সূত্রে আমি‌ও ছোটবেলা থেকে‌ই সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছি। মুসলমানদের প্রতি ঘৃণার কারণে যা এক দু’জন মুসলমান পড়ত আমার সাথে, তাদের সাথে কথাও বলতাম না। ফলে ওরা আমার সম্পূর্ণ অচেনা‌ই রয়ে গেছে। ওদের শুধু সংগঠনের চশমাতেই দেখে এসেছি। তাই আজ যখন ইমাম সাহেবের এই বক্তব্য শুনলাম, আমি ভীষণ দ্বিধায় পড়ে গেলাম। সত্য আর মিথ্যা‌র দ্বন্দ্বে আমার মনে তখন যুদ্ধ চলছে।

বক্তব্য হয়ে গেল। বক্তব্যে‌র পর নামাজে দাঁড়াল সবাই। যেভাবে মহান সম্রাটের সামনে অনুগত প্রজারা দাঁড়ায়, সেভাবেই ওরা দাঁড়িয়ে‌ছে। বুকের নীচে হাত বাঁধা, মাথা ও চোখ মাটির দিকে। সমস্ত শরীর থেকে আনুগত্য ও শান্তির নুর ঠিকরে বেরোচ্ছে। আমি মুগ্ধ হয়ে শুধু দেখছি কোনো এক অদৃশ্য শক্তি‌র সামনে এক অকৃত্রিম আনুগত্যের এই সারিবদ্ধ মানুষ‌দের। এ দৃশ্য যেন অপার্থিব।

একসময় নামাজ শেষ হল। আমার‌ ঘোর তখনও কাটেনি। দেখলাম ইমাম সাহেব আবার বক্তব্য শুরু করেছেন। এবার আরবিতে। কিছু‌ই বুঝতে পারছিলাম না। তবে ভালো লাগছিল। বক্তব্য শেষে সবাই হাত তুলে ওদের আল্লার কাছে কিছু চাইল। এরপর সবাই হাসিমুখে উঠে একে ওপরে জড়িয়ে ধরে ‘ঈদ মুবারক’ বলতে লাগল। দেখলাম আজন্ম শত্রু হারুন এবং রহিম চাচাও হাসিমুখে একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। যেন কত অন্তরঙ্গ তাদের সম্পর্ক! প্রত‍্যেকের মুখে‌ই আজ হাসি। অকৃত্রিম হাসি। সবাই হাসছে, জড়িয়ে ধরছে একে অপরকে। পরিচিত কয়েকজন এসে আমাকেও জড়িয়ে ধরল। আমি তখন প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় চলে গেছি। চারপাশটা হঠাৎ যেন খুব অচেনা হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে কোনো স্বর্গীয় দেশে এসে পড়েছি। আব্দুল্লাহ এসে বলল― চল আমাদের বাড়ি। আজ তোকে ছাড়ছি না। আমি‌ও কোনো কথা না বলে হাঁটতে লাগলাম। দেখলাম পথঘাট সব যেন রঙিন হয়ে গেছে। সোনার কুচি মেশানো হাওয়া ব‌ইছে যেন আমার চারপাশ জুড়ে। হঠাৎই বললাম আব্দুল্লাহ, তোদের চিনতে চাই। চেনাবি? আব্দুল্লাহ একটা নির্মল হাসি দিয়ে বলল, অবশ্যই চেনাব। আগে বাড়ি তো চল।

আমরা দু’জন তখন গাঁয়ের সরু রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। চারিদিকে সবুজ ক্ষেত। দূরে সূর্যের আলো পড়ে পুকুরের জলে গাছেদের ছায়া‌রা দুলছে…

Leave a Response