
সেই প্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষে শুধুমাত্র মুখশুদ্ধি হিসেবেই নয় সাংস্কৃতিক দিক দিয়েও পানের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। পান শব্দটি এসেছে সাংস্কৃত শব্দ ‘পর্ণ’ থেকে যার অর্থ পাতা।সংস্কৃতে পান কে ‘তাম্বুল’ ও বলা হয়।এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে পান জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
পান ভারতীয় ঐতিহ্য এবং আচার-আচরণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।পূজা থেকে বিবাহ কিম্বা অতিথি আপ্যায়ন সব ক্ষেত্রেই পান ছিল অপরিহার্য।শুধু তাই নয় চিকিৎসাশাস্ত্রেও রয়েছে পানের মহিমা।বহু রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে আর্য়ুবেদ শাস্ত্রে পানকে ঔষধ হিসেবে বর্নণা করা হয়েছে।
প্রাচীন ভারতের বহু ধর্মগ্রন্থ,কাব্যগ্রন্থ, এবং চিকিৎসাশাস্ত্রেও পানের কথা বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে।এছাড়াও ভারতে আগত বহু বিদেশী পর্যটকদের ভ্রমনের বিবরণ থেকেও ভারতীয়দের পান প্রীতির কথা জানা যায়।
ভারতবর্ষে পানের প্রচলন প্রায় কয়েক হাজার বছর পূর্বের হলেও তা মুসলিম আমল বিশেষ করে মুঘল আমলে আরও জনপ্রিয় হয়।শুধুমাত্র বাদশাহ নয়, তাদের অধীনস্থ প্রাদেশিক শাসনকর্তারাও পানে মজে থাকতেন।শাসকশ্রেণীর ছোঁয়া পেয়ে পান তখন পরিণত হয় শাহী পানে।পানের সাথে জড়িয়ে যায় বাদশাহ ও তাদের প্রাদেশিক শাসকদের শান-সৌকত।মুঘল আমলে পান খাওয়া কারো কাছে ছিল নেশা,আবার কারো কাছে তা ছিল বিলাসিতার নামান্তর। মুঘল আমলে হারেমে শাহী পান তৈরী ও পান খাওয়া এবং খাওয়ানোর প্রতিযোগিতা চলত।কথিত রয়েছে যে মুঘল বাদশাহ জাহাঙ্গীরের বেগম নূরজাহানের খুব পানের নেশা ছিল।তিনিই নাকি মুঘল অন্তঃপুরে পানকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।বেগমদের পাশাপাশি সেই আমলের বাঈজী মহলেও পান খুব জনপ্রিয় ছিল।তবে শুধুমাত্র নেশার জন্য নয়,তৎকালীন সময়ে মেয়েরা ঠোঁট ও জিভ লাল করে নিজেদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্যও পান খেত।তবে হিন্দু সমাজে বিধবাদের পান খেয়ে ঠোঁট রাঙানো নিষিদ্ধ ছিল।
পান খাওয়া বিলাসিতার পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তখন পানের সাথে সম্পর্কযুক্ত দব্যসামগ্রী যেমন পানদান(যেখানে পানের মশলা রাখার পাত্র),নাগরদান(পানের পাতা রাখার পাত্র),খাসদান(তৈরি করা পান রাখার বা পরিবেশন করার পাত্র),উগালদান বা পিকদান(পানের পিক ফেলার পাত্র)এবং পান খাওয়ার বিভিন্ন রকমের উপকরণ(সুপারি,খয়ের,চুন,বিভিন্ন রকমের এলাচ,লবঙ্গ,গোলমরিচ,কিমাম বা তরল তামাক,নারকেল,মিস্রি,গোলাপের নির্যাস যুক্ত মিষ্টি তরল,কেশর,শুকনো আদা,জায়ফল,মিষ্টি ও সুগন্ধি সুপারি,চেরি,শুকনো ফল,মোতি চূর্ণ,কস্তূরী ,কর্পুর)এর কদরও বেড়ে যায়।যে যত বেশি ধনী তার পান দান ও খাসদান, পিক দান হত তত বেশি মূল্যবান ও কারুকার্যখচিত।তৎকালীন সময়ে বাদশাহ,নবাব,রাজা,জমিদারদের থাকত সোনার পানদান, তাতে বসানো হত তাদের সামর্থ অনুযায়ী দামী পাথর।বাদশাহ ও তাদের প্রাদেশিক শাসকদের পানদান,নগরদান,খাসদান ও পিকদান বহন করার জন্যও আলাদা আলাদা ভৃত্য থাকত।পিকদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভৃত্যরা হাতে পিকদান নিয়ে সবসময় তাদের প্রভুদের পাশে পাশে ঘুরত।
মুঘলদের প্রাদেশিক শাসকদের অধিকাংশ পান খেলেও পান নিয়ে যারা আড়ম্বরতা দেখিয়েছিল তারা হল অওধ ও হায়দ্রাবাদ সুবার শাসকরা।অওধের শাসকরা পানকে বিলাসিতার সর্বচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।
অওধের নবাবদের পৃষ্টপোষকতায় পান বহু উৎকর্ষতা লাভ করেছিল।যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন রকমের পানের উদ্ভব হয়েছিল।যেগুলির অন্যতম হল পিস্তায় পান,বাদামি পান, সাউনফিয়া পান, জাফরানি পান, পেথে কা পান, আওনলে কা পান, বেগম পসন্দ পান, হাজমে কা পান, সিনে মে দার্দ কা পান, পালঙ তোর পান খাট্টা, মিঠা পান, শাহী মিঠা পান।এছাড়াও ছিল সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহের বিখ্যাত শাহী গিলৌরী পান।লখনৌতে পান খাওয়ার এবং খাওয়ানোর এক নতুন নতুন তারিকা চালু হয়েছিল।অওধের শাসকদের মধ্যে সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহের পান প্রীতি মনে রাখার মতো ছিল।তিনি উন্নত মানের জর্দা ও বহু শাহী মশলা সহযোগে পান খেতেন।লখনৌ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কলকাতায় এসে তিনি গান,বাজনা এবং শায়রী,মুশায়রায় মন দিয়েছিলেন।তিনি গদিতে বসে আয়েসে পান খেতে খেতে এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করতেন। মেটিয়াবুরুজ থেকে কোন কাজে কিম্বা কোন অনুষ্ঠানে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে যেতে হলেও তার সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসেবে থাকত রাজকীয় পান।সুলতানের সেই পানে এমন কিছু মশলা থাকত যে, সেই পান খেলে ভরা শীতেও ঠাণ্ডা অনুভূত হত না।সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহের সেই শাহী পান নিয়ে বেশ মজার একটি গল্পও প্রচলিত রয়েছে।
সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহ তখন পাকাপাকি ভাবে কলকাতাবাসী।লখনৌকে ভুলে মেটিয়াবুরুজকেই তিনি বানিয়েছিলেন তার ছোট লখনৌ।সেখানেই প্রতি সন্ধ্যায় সেজে ওঠত দরবার।বসত নাচ,গানের আসর।সেই আসরে কলকাতা শহরের বহু গন্যমান্যরা উপস্থিত হতেন। স্বনামধন্যদেরই একজন ছিলেন রুপেন্দ্র কৃষ্ন দেব।রুপেন্দ্র বাবুর অন্য পরিচয় থাকলেও নাচ,গানের সমাঝদার হিসেবেই তিনি অধিক পরিচিত ছিলেন।সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহের সাথে তার খুব সখ্যতাও ছিল। ফলে রুপেন্দ্র বাবুর অধিকাংশ সন্ধ্যা কাটত সুলতানের দরবারেই।
একদিন শীতের সন্ধ্যায় রুপেন্দ্র বাবু শহরের মধ্যেই এক নাচ,গানের আসরে উপস্থিত হয়েছেন।সেখানে সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহও আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।কিন্ত সেই ভরা শীতের মধ্যেও সুলতান ওয়াজিদ আলির পরনে একখানি অতি সুক্ষ পোশাক দেখে রুপেন্দ্র বাবুর কৌতুহলের আর শেষ থাকল না।তিনি সুলতানকে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন এই ভরা শীতের সন্ধ্যায় তার এমন পোশাক পরিধানের কারণ।
প্রশ্ন শুনে নবাব মুচকি হেসে জবাব দিলেন আমার এমন পোশাকের কারণ আমার ‘পান’।তিনি আরও জানালেন যে, আমার এই পানে এমন কিছু শাহী মশলা থাকে যা শরীর গরম রাখে।একথা শুনে রুপেন্দ্র বাবু সুলতানের কাছে একটি পান চেয়ে বসলেন। নবাব একথা শুনে তার বহুমূল্যের রত্নখচিত খাসদান থেকে একটি পান তাকে দিলেন।সেই শাহী পান খেয়ে রুপেন্দ্র বাবু এতই মুগ্ধ হলেন যে, আসর শেষে বাড়ি ফেরার সময় সুলতানের কাছে আরও একটি পানের অনুরোধ করে বসলেন।কিন্ত সুলতান ওয়াজিদ আলি শাহ এবার রুপেন্দ্র বাবুকে সরাসরি বললেন যে,আপনার পক্ষে এই পান আর না খাওয়ায় শ্রেয়।কিন্তু সুলতানের মুখে একথা শুনে রুপেন্দ্র বাবু অবাক হয়ে সুলতানকে জানালেন যে, একটা পান তিনি খেয়েছেন কিন্ত তাতে তার কোন সমস্যা হয়নি।ফলে আর একটি পান খেলেও তার কিছুই হবেনা।সুলতান একথা শুনে মুচকি হেসে তার খাসদান থেকে একটি পান বের করে রুপেন্দ্র বাবুর দিকে এগিয়ে দিলেন।রুপেন্দ্র বাবু সেই পান মুখে পুরে সুলতানকে শুকরিয়া জানিয়ে বিদায় নিয়ে ঘোড়ার গাড়ি করে বেরিয়ে পড়লেন নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে।
এদিকে যাত্রাপথে কিছুটা রাস্তা পেরোতেই তার শরীর গরম হয়ে উঠল।ফলে তিনি বাধ্য হয়ে তার পরনের শীতবস্ত্র খুলে ফেললেন।কিন্তু তাতেও তার শরীরের গরম ভাব কিছুতেই কমছে না।ফলে তিনি গাড়ির জানালা খুলে দিলেন।শীতের রাতে সেই খোলা জানালা দিয়ে হু হু করে হাওয়া ঢুকতে শুরু করল।কিন্তু তাতেও অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন হলনা।অবশেষে রুপেন্দ্র বাবু বাধ্য হয়ে গাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে কোচওয়ানের পাসে বসে বাড়ি ফিরলেন।সেই সাথে তিনি সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন এমন ভরা শীতেও নবাবের সুক্ষ পোশাক পরার কারণ।
অওধের শাসক ও তাদের বেগমদের পান প্রীতি তো ছিলই সেই সাথে তৎকালীন সময়ে শায়েরদের সাহিত্য সৃষ্টিতেও পানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য।লখনও এর শায়েররা অবশ্য পানের মুখ দিয়েও কথা বলিয়ে নিয়েছেন।
“পান ক্যাহতা হে কি মে শুককে মর যাউংগা
য়ে লাব-এ-ইয়ার আগার তুনে না চুমা মুঝকো”
আওধের শাসকদের মতো হায়দ্রাবাদের শাসকরাও ছিলেন পান বিলাসী।সেখানে পান নবাবদের পৃষ্টপোষকতা লাভ করেছিল।মশলা দিয়ে পান তৈরী করা ছিল একটা শিল্প এবং তা নিয়ে প্রতিযোগীতাও চলত। হায়দ্রাবাদের সপ্তম নবাব মীর ওসমান আলি খান পান পছন্দ করতেন তবে পানের থেকেও পানদানের প্রতি তার ঝোক ছিল বেশি।এই খবর পেয়ে নবাবের রাজত্বের ২৫বছর পূর্তি উপলক্ষে হায়দ্রাবাদ সুবার বহু সামন্ত প্রভুরা নবাবকে সোনার তৈরী ও হীরা জহরত বসানো নানান অকৃতির ও নক্সার পানদান উপহার হিসেবে প্রদান করেছিলেন। হায়দ্রাবাদের বেগমরাও পান পছন্দ করতেন।তারা যেখানেই যেতেন সাথে পানদান নিতে ভুলতেন না।আরও একটি মজার ব্যাপার হল দরবারী কর্মে ব্যস্ত নবাবকে খেতে ডাকতেও নাকি বেগমরা পান ব্যবহার করতেন।এক্ষেত্রে বেগম নবাবকে খেতে ডাকার জন্য নিজে হাতে একটি শাহী পান তৈরী করে তাতে একটি বিশেষ আতর মাখিয়ে সেই পান বাদী মারফৎ নবাবের হাতে পৌছে দিতেন।নবাব পান খুলতেই পানের ভেতর থেকে সেই বিশেষ আতরের সুবাস নবাবের নাকে গিয়ে পৌঁছলেই নবাব বুঝে যেতেন বেগম তাকে খাওয়ার জন্য তলব করেছেন।হায়দ্রাবাদের সমাজে পান এতই জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে কারো জন্য শুভকামনার সময়ও বলা হত যে ‘আপনার পানদান যেন কখনও খালি না হয়ে যায়’।মুসলিম আভিজাত্যের সাথে পান মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছিল।
বাংলার নবাবরাও পান বিলাসী ছিলেন।নবাবরা বিভিন্ন ধরণের মশলা সহযোগে পান খেতেন এবং খাওয়াতেন বলে কথিত রয়েছে।নবাব পরিবারে কোন অতিথি এলে প্রথমে তার হাতে পান তুলে দেওয়া হত এবং তারপর হাতে আতর লাগিয়ে আপ্যায়ন করা হত।বাংলার নবাবরা পানে কস্তূরী মিশিয়ে খেতেন।ফলে নবাবরা ঘামলেও নাকি ঘামের দুর্গন্ধের বদলে ঘাম থেকে কস্তূরীর সুগন্ধ বেরতো।নবাবদের পানের জন্য আলাদা একটি বিভাগ ছিল ‘তাম্বুল খানা’ এখানে নানান ধরণের কর্মচারী কাজ করত।এই সব কর্মচারীদের তদারকি করতেন একজন দারোগা। তিনিই ছিলেন এই বিভাগের প্রধান।নবাব বেগম সহ নিজামত পরিবারের সদস্যদের পান ও তার বিভিন্ন মশলা আসত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।নবাবরা খুব ভারী জর্দা ও বিভিন্ন রকমের মশলা সহযোগে পান খেতেন।নবাবদের পান খাওয়ার সময় সেই পানের সুগন্ধ আশেপাশেও ছড়িয়ে পড়ত খুব স্বাভাবিক ভাবেই।এবং নবাবরা পান খেয়ে তার অবশিষ্টাংশ ফেলেদিতেন।কথিত রয়েছে যে, একবার নবাব হুমায়ূন জা’র এক ভৃত্য নবাবের পানের সুগন্ধে মোহিত হয়ে নবাবের ফেলে দেওয়া পান কুড়িয়ে মুখে দেয়।এবং মুখে দেওয়ার কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই খুব সম্ভবত নবাবের পানের ভারী জর্দা ও মশলা তেজ সহ্য করতে না পেরে সেই ভৃত্যের মৃত্যু ঘটে।নবাব হাসান আলি মির্জাও পান প্রেমী ছিলেন।নবাবের দরবারে আগত সমস্ত মানুষের জন্যই তিনি পানের ব্যবস্থা রাখতেন।
বর্তমানেও প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়েই পানের রমরমা।গ্রাম,শহর ও নগর সবত্রই পানের দোকান চোখে পড়ে।শুধু তাই নয় সেই সাথে টেনে বাসে বা রাস্তাতেও দেখা মেলে বহু ভ্রাম্যমান পান বিক্রেতার যাতে পান প্রেমীদের অসুবিধা না হয়।বর্তমানেও সমগ্র ভারত জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ও স্বাদের পান রয়েছে।কেউ পান খায় নেশার তাড়নায় আবার কেউ খায় শখ করে কিম্বা কোন বিশেষ দিনে।পানের গুনমান নির্ভর করে পান পাতা এবং পানে ব্যাবহারিত নানান ধরনের মসলার উপর।কোন পান শুধুমাত্র চুন সুপারি ও মৌরী দিয়েও তৈরী হয়। আবার কোন পান কাস্তরী সহ ১৫-২০ রকমের মসলা সহযোগে তৈরী হয়।বর্তমানে আবার চকলেট পান, অইস পান, এবং ফায়ার পানের মত নতুন পান বাজার মাতাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গেও পান প্রেমীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়।বাঙালির বহু শুভ কাজেই পানের ব্যবহার রয়েছে।বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে আজও অতিথি অপ্যায়ন করা হয় পান দিয়েই।গ্রাম-গঞ্জের বহু বয়স্ক মানুষের সময় কাটানোর অন্যতম সঙ্গী এই পান।পান বাঙালির দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত সেই সুপ্রাচিন কাল থেকেই।ফলে পান নিয়েও বাংলায় যুগে যুগে লেখা হয়েছে বহু গান,ছড়া,কবিতা।পান নিয়ে বহু লোককথাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে।
বর্তমানে পানের জনপ্রিয়তায় অনেকটাই ভাটা পড়েছে। কারণ পান খাওয়া এখন শুধুমাত্র প্রবীণ মানুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।সেই সঙ্গে নবীন প্রজন্ম পান বিমুখ।অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের চেয়ে তুলনামুলক ভাবে শহর ও নগরের মানুষদের মধ্যে পান খাওয়ার প্রবনতাও কমে এসেছে অনেকটাই।।তার জায়গায় এসেছে চুয়িঙ্গাম সহ নামিদামি কোম্পানীর নানান স্বাদে ও গন্ধেভরা মুকশুদ্ধি যা খুব সহজেই পানের যায়গা দখল করে নিয়েছে।ফলে একথা বলাই যায় যে বর্তমানে পানের জনপ্রিয়তা কিছুটা অবশিষ্ট থাকলেও সূদুর ভবিষৎ এ পান যে অস্তিত্বের সংকটে পড়বেনা একথা বোধহয় জোর দিয়ে বলা যাবেনা।
লেখক পরিচিতি
লেখক পেশায় লালবাগ এসসিবিসি কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক।ভালো লাগার বিষয় ইতিহাস, ভ্রমণ,ফটোগ্রাফি।সেই সাথে তিনি ইতিহাস নিয়ে, বিশেষ করে বাংলার নবাবী আমলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন দৈনিক সংবাদপত্র সহ নানা ধরনের অনলাইন ও অফলাইন পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন।