Backlink hizmetleri hakkında bilgi al
Hacklink satın almak için buraya tıklayın
Hacklink satışı için buraya göz atın
Hacklink paneline erişim sağla
Edu-Gov Hacklink ile SEO'nuzu geliştirin

Backlink
Backlink hizmeti al

Hacklink
Hacklink hizmetleri hakkında bilgi al

Hacklink Al
SEO dostu hacklink satın al

Hacklink Satışı
Hacklink satışı ve hizmetleri

Hacklink Satın Al
SEO için hacklink satın al

Hacklink Panel
SEO hacklink paneli

Edu-Gov Hacklink
Etkili EDU-GOV hacklink satın al

For more information and tools on web security, visit DeepShells.com.tr.

To get detailed information about shell tools, visit DeepShells.com.tr.

To learn more about Php Shell security measures, check out this article.

For the best Php Shell usage guide, click on our guide.

If you want to learn about Aspx Shell usage to secure web applications, click here.

What is Aspx Shell and how to use it? Check out our Aspx Shell guide: Detailed information about Aspx Shell.

For detailed information about Asp Shell security tools in web applications, you can check out this article.

Discover the best Asp Shell usage guide for developers: Asp Shell usage.

Artical

জীবন যেখানে যেমন : আরিফ আজাদ

463views

দুপুর থেকে বাইরে কয়লা-পোড়া রোদ। রোদের তেজ আর তাপে ঘরের ভিতরটাও উনুনের মতো গরম হয়ে আছে। মাথার ওপর অবিরাম, অবিশ্রান্তভাবে ঘুরতে থাকা সিলিং ফ্যানের হাওয়াগুলোও যেন বিদ্রোহ করে বসেছে। গায়ে হাওয়া লাগছে না আগ্নেয়গিরির তাপ লাগছে বোঝা মুশকিল।
এরই মাঝে রান্নাঘর থেকে খুন্তি হাতে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো রেবেকা। এসেই আমাকে বললো, ‘শুনছো, মাছের তরকারিতে না লবণ একটু বেশি হয়ে গেছে। পানি দিলেই কমে যেতো, কিন্তু তুমি তো অতো ঝোল পছন্দ করো না, তাই দিতে চাচ্ছিনা। কোন সমস্যা হবে তোমার?’
আমি দেখলাম, কথাগুলো বলার সময় রেবেকার কপাল বেয়ে ঝর্ণাধারার মতো ঘাম ঝরছে। সে অভিজ্ঞ অভিনেত্রীর মতো, ওড়নার একটা অংশ দিয়ে চট করে তা মুছে নিয়ে আমার উত্তরের অপেক্ষায় দরোজার কিনারে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি হাসফাস করতে করতে বললাম, ‘দরকার কী বলো তো এতো কষ্ট করার? সাধারণ কিছু একটা হলেই বেশ চলে যেতো। এই গরমের মাঝে চুলোর পাড়ে বসে হরেক পদের তরকারি রান্না করার কোন মানে আছে?’
আমার এই কথাকে খুব একটা আমলে নিলো না রেবেকা। নিজের ওড়না দিয়ে দ্বিতীয়বার কপাল বেয়ে নামা ঘাম মুছতে মুছতে বললো, ‘সপ্তাহে এই একদিনই তো দুপুরে বাসায় খেতে পারো। অন্য সব দিন তো সেই বাইরেই ছুটোছুটি। কী যে খাও আল্লাহ মালুম! এই একদিন-ই যদি তোমাকে ভালো-মন্দ রেঁধে কিছু না খাওয়াতে পারি, তাহলে আর আমার স্ত্রী হওয়ার সার্থকতা কোথায়?’
– ‘বেশ প্যাচাল পাড়া শিখে গেছেন আপনি! এই যে লম্বা লম্বা লেকচার শুনাচ্ছেন, নিজের চেহারাটার দিকে একবার তাকিয়েছেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে?’
– ‘ও আমার দেখে আর কী হবে, বলো? নতুন করে তো আর বিয়ে হবেনা আমার! তোমার যদি আমাকে আর পছন্দ না হয় বলবে, আমি সোজা বাপের বাড়ি চলে যাবো।’
– ‘হয়েছে বাবা হয়েছে! কান ধরছি! যার জন্যে চুরি করি সেই বলে চোর! বলতে গেলাম ভালো, হয়ে গেলাম খারাপ!’
– ‘আমার অতো ভালো চাওয়া লাগবেনা তোমার। এখন বলো তাড়াতাড়ি, খানিকটা লবণ বেশি হলে ঝামেলা হবে?’
– ‘ঝামেলা মিটে যেতো যদি তুমি ওই গরম চুল্লি থেকে বেরোতে। বাইরে খেতে খেতে লবণ কম আর বেশি— দুটোই আমার মুখ-সওয়া হয়ে গেছে’।
রেবেকা আর কোন জবাব দিলো না। এক ভোঁ দৌঁড়ে রান্নাঘরে চলে গেলো।
রেবেকা আসলে সত্যি-ই বলেছে। কাজের সুবাদে আমাকে ছুটে বেড়াতে হয় দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। আমার কাজ হলো ফিচার লেখার উপাদান সংগ্রহ, এবং তা দিয়ে পত্রিকার জন্য ফিচার তৈরি করা। সাঁওতাল পল্লী থেকে শাপলার বন— কোথায় যাইনা আমি গল্পের উপকরণ খুঁজতে? নিরন্তর ছুটতে গিয়ে কখন যে দিন রাত হয়ে যায়, রাত কেটে ভোর আসে— টের পাইনা।
[২]
‘যেমন বুনো ওল তেমন বাঘা তেঁতুল’- প্রবাদ বাক্যকে সত্যি প্রমাণ করে, কটমটে সূর্যটাকে একদল দস্যি মেঘ এসে ঢেকে ফেললো। মুহূর্তকাল পরেই নেমে এলো অঝোর ধারার বৃষ্টি। অবিরাম ধারার বর্ষণ প্রকৃতিজুড়ে। বৃষ্টির এমন একাধিপত্য দেখে কে বুঝবে— একটু আগেও এখানে কাঠফাটা রোদ ছিলো? আকাশের বর্ষণে সবকিছু যেন এক অনুপম স্নিগ্ধতা আর শীতলতায় ভরে গেলো।
আমি দেখলাম, আমার জানালার কিনারে দুটো চড়ুই গা ঝাড়া দিয়ে বসেছে। হঠাৎ এমন ঝড়ো বৃষ্টিতে তারা সম্ভবত বিভ্রান্ত। এমন গা-শীতল করা আবহাওয়ায় নিজেকে চাঙা করে নিতে বেলকনিতে এসে দাঁড়ালাম। আকাশ থেকে প্রকাণ্ড আকারের বৃষ্টির ফোঁটা ঝড়ে পড়ছে। প্রচন্ড গরমে হাহাকার করে উঠা প্রকৃতিতে এই বৃষ্টি-জল একফালি স্বস্তি হয়ে ধরা দিলো।
বৃষ্টি আমার বরাবর-ই পছন্দের। এই একটা জিনিসকে নিয়েই সম্ভবত পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সাহিত্য রচিত হয়েছে। আর, সেই সাহিত্যের তিনভাগের দুইভাগ হয়েছে কেবল ভারতীয় উপমহাদেশে। বৃষ্টি নিয়েও যে এতো চমৎকার সাহিত্য রচনা করা যায়— এই কথা অনেক ইউরোপীয়রা বিশ্বাস করতোনা। তাদের কাছে বৃষ্টি ছিলো নিছক বিরক্তি আর বিড়ম্বনার কারণ। অবশ্য, উত্তর-আধুনিক ইউরোপ যখন দালান আর ইমারতে ভরে গেলো, প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে একপ্রকার দূরেই ছিটকে পড়লো ইউরোপীয়ানরা। বৃষ্টির সময় প্রকৃতি যে মনোহরা রূপ ধারণ করে— তা অবলোকনের সুযোগ আর থাকলো-ই বা কই তাদের? এজন্যে বোধকরি তারা ভাবতে পারতো না যে— বৃষ্টি নিয়েও চমৎকার সাহিত্য তৈরি করা যায় এবং দূর্দান্ত সাহিত্য তৈরি হয়েও আছে।
বৃষ্টি নিয়ে আমার এমন ভাবালুতার মাঝে ছেদ ঘটালো রেবেকা। সে বেলকনিতে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললো, ‘কি সুন্দর বৃষ্টি, তাই না গো?’
– ‘হু’।
– ‘মানুষের দুয়া যে এতো দ্রুত কবুল হয়, তা দেখে আমি তাজ্জব বনে গেলাম, জানো?’
আমি কৌতূহলী দৃষ্টিতে রেবেকার দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘বুঝিনি’।
– ‘ওই যে, গরমে তুমি বেশ হাসফাস করছিলে না? তখন রান্নাঘর থেকে মনে মনে দুয়া করছিলাম। বলছিলাম, ‘আল্লাহ, একটা ঝুম বৃষ্টি দিয়ে চারপাশটা ঠান্ডা করে দাও। আমার জামাইটার অস্বস্তি লাগছে অনেক। এমন বৃষ্টি দাও যেন আমার জামাই বৃষ্টি নিয়ে একটা গল্পও লিখে ফেলতে পারে। হি হি হি’।
– ‘তুমি কি সত্যিই এমন দুয়া করেছিলে?’
– ‘হ্যাঁ। এমনটাই তো জপছিলাম রান্নাঘরে। কিন্তু বিশ্বাস করো, সত্যি সত্যিই যে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামবে— তা আমার ধারণাতেই ছিলো না। আল্লাহ মাঝে মাঝে কতো দ্রুত দুয়া কবুল করে ফেলেন, দেখলে?’
আমি জানি রেবেকা মিথ্যে বলেনি। ও কখনোই মিথ্যে বলেনা। আমাদের পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনোদিন একটিবারের জন্যও তাকে আমি মিথ্যে বলতে দেখিনি। ও যখন এই দুয়া করেছে বললো, তাহলে সেটা অবশ্যই সত্যি।
ফ্যানের নিচে বসে হাওয়া গিলতে থাকা আমার অস্বস্তি কাটাতে বৃষ্টির জন্য দুয়া করেছে জ্বলন্ত চুলোর পাশে থাকা এক রমণী! কি অবিশ্বাস্য ভালোবাসা! কি অনুপম মায়ার বন্ধন!
রেবেকা আবার বললো, ‘বৃষ্টির সময় দুয়া করলে ওই দুয়াও কবুল হয়। চলো, আমরা দুয়া করি’।
– ‘কি দুয়া করবো?’
– ‘যা মন চায় করো’।
জানালা গলে, রেবেকার হাত চলে গেলো বাইরে। রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে তার হাত। আমি দেখলাম, সে চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে কিছু বলছে। আমি জানি, তার এই বলার অনেকটাজুড়ে আমি আছি। ও আমাকে রাখবেই।
[৩]
রাত নেমে গেছে অনেক আগেই। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে এখন। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি ল্যাপটপ খুলে বসে পড়লাম। কালকেই আমাকে একটা ফিচার জমা দিতে হবে অফিসে। পত্রিকার ত্রৈ-মাসিক ম্যাগাজিনের সময় আর বেশি নেই হাতে।
অনেকটুকু লেখার পরে খেয়াল করলাম, বাইরে আবার ঝুম বৃষ্টি নেমেছে। বাতাসে জানালার কাঁচগুলো রিনিঝিনি শব্দ তুলছে। আমি পড়ার ঘর থেকে শো’বার ঘরে এলাম। আলো জ্বালিয়ে দেখি রেবেকা ঘুমিয়ে পড়েছে। সারাদিনের সাংসারিক ব্যস্ততার পরে এক শান্তির ঘুমে বেঘোর সে। তার নিষ্পাপ, মায়াময় চেহারা, তাতে কোথাও কোন অভিযোগের রেখা ফুটে নেই। এই মেয়েটা সারাটা দিন আমাকে নিয়ে ভাবে। আমার ভালো থাকা, আমার ভালো-লাগা নিয়ে তার কতো ভাবনা-চিন্তা! মাঝে মাঝে মনে হয়— মেয়েরা বোধকরি অন্য ধাতুতে গড়া। একেবারে অপরিচিত একটা মানুষ, একটা পরিবার, একটা পরিবেশকে তারা কতো নিবিড়ভাবে আপন করে নেয়! কতো সুন্দর করে তাতে এঁকে দেয় ভালোবাসার আল্পনা!
বেলকনিতে এসে দাঁড়ালাম আমি। বৃষ্টির সময়ে দুয়া করলে সেই দুয়া কবুল হয়। বাইরে হাত বাড়াতেই বৃষ্টির ফোঁটাগুলো আমার হাতে লেগে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। চোখ বুজে, হৃদয়ের গভীর থেকে ভাষা টেনে নিয়ে বিড়বিড় করে বললাম, ‘পরওয়ারদেগার! রেবেকাকে আমি অসম্ভব ভালোবাসি। এই দুনিয়ার মতো, জান্নাতেও আমরা এভাবে কাছাকাছি, পাশাপাশি থাকতে চাই’।

‘জীবন যেখানে যেমন‘ বই থেকে নেওয়া একটা গল্প…

Leave a Response